আমার ছাদ বাগানের শুরুটা যেভাবে হয়েছিল
প্রথমে উদ্দেশ্য ছিলো,নিজের হাতে করা শাক, সবজি চাষ করে পরিবারের চাহিদা পূরণ করবো । শুরুটা হলো ধুন্দল, লাউ, চাল, কুমড়ো, করল্লা, পুইশাক,লাল শাক,কাঁচামরিচ ,শসা ,পালং শাক ইত্যাদি দিয়ে ।
প্রথমে বছরে আল্লাহ্'র রহমতে চিন্তাতীত সাফল্য পাওয়ায় ছাদে চাষাবাদের প্রতি আমার আগ্রহ বেড়ে গেলো ।
৫০ লিটারের একটি ড্রাম দিয়ে শুরু করা সেই ছাদ বাগানে আজ প্রায় ৩০ টি ড্রামে শোভা পাচ্ছে নানা রকমের ফুল ও ফলের গাছ ।
যেহেতু ব্যক্তি জীবনে আমি একজন আইটি বিশেষজ্ঞ । কাজ করি বাংলাদেশ আমর্ড ফোর্সের একটি প্রতিষ্ঠানে আইটি বিভাগের প্রধান হিসাবে । তাই কর্মের করণে আমাকে সারাদিন ব্যস্ত থাকতে হয় । বাগানের জন্য কাজ করার সময় মেলে সন্ধ্যার পরে বা রাতে । তবে শুক্র শনিবারগুলো এখন আমার কাছে যেন আর্শিরবাদ হয়ে আসে । কারণ এ দুটি দিন আমার বন্ধ থাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিজ বাগানের জন্য কাজ করতে পারি।ছাদ বাগান অন্যের চোখে দেখতে যতোটা নয়ন মুগ্ধকর হয় বাগানীর জন্য কিন্তু ততোটাই কষ্ট সাধ্য একটি কাজ । কারণ বাগানের পরিচর্যায় পর্যাপ্ত সময় ও শ্রম দিতে না পারলে মাস খানেকের মধ্যেই সব কিছু রোদে পুড়ে, বৃস্টিতে ভিজে শেষ হয়ে যাবে ।
ছাদ বাগানে প্রতিটি মূর্হুতে প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে হয় । তাই যথেষ্ট ধৈয্য ও অর্থ ব্যয় করার মন মানসিকতা না থাকলে ছাদ বাগান করে সফল হওয়া যাবে না । মনে রাখতে হবে মানসিক তৃপ্তিটাই ছাদ বাগানীদের জন্য শেষ কথা ।ছাদ বাগানে প্রতিটি মুহূর্তে প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে হয় । তাই যথেষ্ট ধৈর্য ও অর্থ ব্যয় করার মন মানসিকতা না থাকলে ছাদ বাগান করে সফল হওয়া যাবে না । মনে রাখতে হবে মানসিক তৃপ্তিটাই ছাদ বাগানীদের জন্য শেষ কথা ।
কিভাবে শুরু করবেন : -
আপনি যদি মনে করে থাকেন হুট করেই সুন্দর সাজানো গোছানো একটি ছাদ বাগান করে ফেলবেন । আত্মীয় স্বজন, বন্ধু, বান্ধব দেখতে এসে আপনার প্রসংসা করবে তাহলে হবে না । শুরুটা করতে হবে , ছোট ছোট টব এ গাছ লাগিয়ে ।
যদি সম্ভব হয়, আজই আপনার বারান্দায় দু'টো টবে গাছ লাগিয়ে ফেলুন । এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কি গাছ লাগাবেন?
যেহেতু বারান্দা তাই ধরেই নিতে হবে, গাছের জন্য অপরিহার্য তিনটি উপাদান আলো, বাতাস, রোদ্দুর কম । তাই আমি বলবো শুরুটা করুণ এমন কোন ফুলের গাছ দিয়ে যার ধৈর্য শক্তি অনেক অর্থাৎ কষ্ট সহিংস । আবার সেটি সকলের কাছেই প্রিয় । বলুন তো এমনটি দু'টি ফুল গাছ কি কি হতে পারে ?হ্যা, ঠিক ই ধরেছেন । আমি গোলাপ এবং বেলি ফুলের কথা বলছি । এ দুটো গাছ অনেক কষ্ট সহ্য করে টিকে থাকতে পার।
গোলাপ ও বেলিকে বেছে নিতে আরো একটি কারণে । সেটি হচ্ছে, এ গাছ দুটিতে রোগ, পোকার আক্রমণ হয় খুব কম । আবার কোন প্রকার যত্ন ছাড়াও অনেকদিন টিকে থাকতে পারে । ধরুণ আপনার বারান্দায় বেশ কয়েকটি টব রয়েছে । কিন্তু পুরো পরিবার নিয়ে আপনাকে এক সপ্তাহের জন্য অন্য কোথাও যেতে হলো । ফিরে আসার পর দেখলেন , আপনার সব গাছ মরে ভেটকি দিয়ে আছে । সেটা কি ভাল লাগবে ? লাগবে না । কিন্তু আপনার বারান্দায় যদি এ গাছ দুটো থাকে তাহলে কোথাও গেলে আপনাকে গাছের টেনশনে থাকতে হবে না । সে গ্যারাটি দিচ্ছি ।
আর যদি একটু যত্ন-আত্তি করে ফুল ফুটিয়ে ফেলতে পারেন তাহলে দেখবেন । আপনার সেই সাফল্যে পরিবারের অন্য সবাইও খুশি হবে ।
একবার চিন্তা করুণ তো, আপনার বারান্দায় আপনার নিজ হাতে লাগানো গোলাপ গাছে ফুল ফুটে আছে আর আপনি সঙ্গী নিয়ে রাতে বারান্দায় চায়ের পেয়ালা হাতে বসে আছেন ।
পরিবেশটাই অন্যরকম তাই না ?
এর পর কি গাছ লাগাবেন :
ধরে নিলাম গোলাপ এবং বেলি গাছে ফুল এনে আপনি সফল । গাছ লাগবার আগ্রহ আপনার বৃদ্ধি পেয়েছে । আরো গাছ লাগাতে চাচ্ছেন । তাহলে এখন কি গাছ লাগাবেন ?
হ্যা এ পর্যায়ে এসে আপনি , পুইশাক ও করল্লা লাগান । এর জন্য আপনাকে খুব বড় ড্রামের দরকার হবে না । বাসা বাড়িতে নষ্ট হয়ে যাওয়া পুরাতন বালতি হলেই যথেষ্ট । পুরোনা বালতিতে মাটি ভরে , তাতে দু' তিনটে পুই শাক ও করল্লার দানা ফেলে দিন । দেখবেন আপনার স্বপ্নরা ডানা মেলে উড়তে শুরু করবে।কারণ গোলাপ ও বেলি গাছের মতো , করল্লা , পুইশাকও যথেষ্ট অবহেলায় বেঁচে থাকতে পারে। যখন বারান্দার পুই শাক আপনার ডাইনিং টেবিলে এসে খাবারের আইটেমের সাথে যোগ দিবে তখন আপনি কিন্তু মনে মনে ছাদ বাগান করার জন্য প্রস্তত নিয়ে ফেলবেন । ছাদ বাগান করার উপকার তিনটি , এক. নিজে হাতে লাগানো টাটকা ও ভেজাল মুক্ত সবজি , দুই , শারীরিক বেয়াম এবং তিন নাম্বার হচ্ছে, প্রকৃতিতে অক্সিজেন সাপ্লাই দেওয়া ।
পরিশেষ :
এর পরের পোষ্টগুলোতে আমার ছাদে বাগানে সফলতার গল্পগুলো লিখবো তা পড়ে আপনিও সফল হতে পারবেন । খুব সহজেই জেনে নিতে পারবেন কি করে ধীরে ধীরে হয়ে উঠতে পারবেন একজন সফল নগর ছাষা ।
লেখাটি পড়ে কেউ উপকৃত হলে ভাল লাগবে
উত্তরমুছুন