ছাদে চাল কুমড়া চাষ ও রোগ বালাই দমন
ছাদে জালি কুমড়া বা চাল কুমড়া চাষ করা খুব সহজ । চাল কুমড়া চাষে খুব একটা পরিশ্রম করতে হয় না । শুধু মাত্র একটি ভাল জাতের কুমড়া গাছ নির্বাচন করে নিতে হবে ।
সময় :
চাল কুমড়া লাগাবার উপযুক্ত সময় হচ্ছে, ফাল্গুন থেকে আশ্বিন মাস ইংরেজিতে ,ফ্রেরুয়ারী থেকে মে মাস । এ সময় চাল কুমড়া বা জালি কুমড়া লাগালে আকার আকৃতি বড় হয় ।
মাটি তৈরি :
একটি হাফ ড্রামের সাধরনত ১০০ থেকে ১৫০ কেজি মাটি ধরে । তাই এক একটি হাফ ড্রাম প্রস্তুত করতে ১০০ কেজি মাটির সাথে ৫০ কেজি গোবর সার খুব ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে ।এছাড়া একটি ড্রামে ২০০ গ্রাম ইউরিয়া , ২০০ গ্রাম টিএসপি ও ২০০ গ্রাম পটাশ ও ৫০ গ্রাম বোরন সার মিশিয়ে মাটি ছালা বা বস্তা দিয়ে ১০ থেকে ১৫ ঢেকে রাখতে হবে । তারপর ঢাকনা খুলে ভেতরের গ্যাস বের করে দিতে হবে । এবং সেচ দিয়ে খোলা কয়েক দিন রেখে দিতে হবে ।
সেচ ব্যবস্থা :
মনে রাখতে হবে জলাবদ্ধতা এ গাছ একদম সহ্য করতে পারে না । তাই সঠিক নিয়মে সেচ ব্যবস্থা বজায় রাখতে হবে । সকাল বিকেল নিয়মিত পানি দিতে হবে । পানি দেওয়ার নিয়ম হচ্ছে, ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে ড্রামের চারপাশে । গাছের গোড়ায় সপ্তাহে একবার হালকা পানির ছিটা দেওয়া যেতে পারে । ড্রামের মাটি যেন কিছুতেই স্যাতস্যাতে না হয়ে যায় সে দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে ।
চারা রোপন :
মাটি প্রস্তুত হলে , তাতে তিন থেকে চারটা বীজ রোপন করতে হবে । রোপনের আগে বীজগুলো সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে । বীজ রোপন করে সেচ দিয়ে তা আবার ছালা দিয়ে ঢেকে দিলে , ৭ থেকে ১০ দিন এর মধ্যে চারা গজাবে । এর পর রুষ্ট পুষ্ট একটি বা দুটো চারা রেখে অন্য চারাগুলো তুলে ফেলে দিতে হবে । চারাগুলো একটু বড় হলে, তার জন্য মাচা তৈরি করে দিতে হবে ।
পোকা মাকর ও রোগ বালাই দমন :
চাল কুমড়া গাছে সাধারণত মাছি পোকা ,ফল ছিদ্রকারী পোকা,,জাব পোকা ও পাতা ছিদ্রকারী পোকার আক্রমন দেখা দেয় । তাই শুরু থেকেই এ ব্যাপারে যত্ন নিতে হবে । বাজারে নানান ধরনের কীট নাশক কিনতে পাওয়া যায় । তবে আমি যেটি ব্যাবহার করে খুব ভাল পেয়েছি , সেটি হচ্ছে, "নাইট্রো ৫০৫ ইসি"।
নাইট্রো (NITRO 505),নামের যে কীটনাশক পাওয়া যায় সেটি স্প্রে করতে হবে । নাইট্রো একটি বহুমূখী তরল কীটনাশক । এটি গাছের বাহিরে ও মাটির ভেতরের পোকা মাকড় সমান ভাবে দমন করে । তাই প্রতি মাসে একবার করে পর পর দু'বার ব্যবহার করলে খুব সহজেই পোকা মাকড় দমন হয়ে যাবে ।
এছাড়াও চাল কুমড়া গাছের গোড়া পচা রোগ দেখা দিতে পারে তাই সেচের দেওয়ার ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে । ড্রামে বা টবে যেনো পানি আটকে থাকতে না পারে সে ব্যাপারে বিশেষ খেয়াল রাখতে হব। এছাড়াও কুমড়া গাছে মোজাইক রোগ দেখা দিতে পারে । এ রোগের পাদুভাব ঘটে মাটিতে ছত্রাকের আক্রমনের কারণে । এ সময় গাছের গোড়ায় পটাশ সার ও ফুরাডান ,টিএসপি প্রয়োগ করতে হবে । এছাড়া ছত্রাক নাশক প্রয়োগ করতে হবে ।
ফল সংগ্রহ :
গাছ লাগাবার ৪০ থেকে ৫০ দিন পর গাছ হতে ফল সংগ্রহ করা যায় । চাল কুমড়া একটি পুষ্টিগুন সর্ম্পন সবজি এ তে প্রচুর পরিমানে, ক্যালরি , মিগ্রা ক্যালসিয়াম ও খনিজ পর্দাথ রয়েছে । চাল কুমড়া বা জালি কুমড়া থেকে মুখরোচক মোরব্বা তৈরি করা হয়ে থাকে । যা চড়া মূল্যে মিষ্টির দোকানগুলোতে বিক্রি হয় ।
শেষ ।
বেশি করে গাছ লাগান পরিবেশ বাচান । গাছ প্রেমিক ই দেশ প্রেমিক ।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন