একটু পরিশ্রম করলেই নিজে বাড়ির অথবা ভাড়াটে বাড়ির ছাদে তৈরি করা যায় নয়নাভিরাম ছাদ বাগান । শাক-সবজি, ফল-মূল লাগিয়ে পাওয়া যায় প্রয়োজনীয় ফসল । মেটানো যায় পরিবারের চাহিদা । রাতারাতি হয়ে উঠুন নগর চাষা ।

রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

একই সাথে দুটি ফসলের আবাদ

 

 আমরা যারা সখের বশে ছাদে চাষাবাদ করি তারা কিন্তু চাইলেই জমির মতো একই সাথে একই ড্রামে দুটি ফসলের আবাদ করতে পারি ।  এক জন্য খুব একটা বেশি পরিশ্রম করতে হবে না । শুধু খেয়াল রাখতে হবে যে ড্রামে বা পাত্রে দুটি ফসলের আবাদ করা হবে তাতে যেনো পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করা থাকে । যারা পাহাড়ি অঞ্চলের জুম চাষের কথা জানেন , তারা জানেন যে, জুম চাষ হচ্ছে , পাহাড়ের ঢালে আগাছা গাছপালা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে সেখানে একই সাথে ধান,যব,ভুট্রা,কলা ও অন্যান্য ফসলের আবাদ করা হয় ।  

আবার দুই ফসলি জমির মতো আপনি আমি চাইলেও একই ড্রামে দুই ফসল আবাদ করতে পারি ।  এর জন্য প্রয়োজন হবে , প্রথমে পাত্র নির্বাচন করা ।  একটি ১০০ লিটারের ড্রাম কেটে দুটি ভাগ করে নিতে হবে ।  সেই ড্রামে প্রথমে একটি পছন্দ মতো ফলে চারা লাগন । সেটিকে আদর যত্ন করে লালন পালন করুণ । চারাটি বড় হয়ে গেলে । অথাৎ চারাটি এক বছর অতিক্রম করলে অথবা প্রথম ফল উত্তোলনের পর । ড্রামের চারপাশ ভাল করে কুপিয়ে তাতে বাসা বাড়িতে  শাক সবজির ফেলে দেওয়া অংশ দিয়ে দিনে । এভাবে কিছু দিন পর সেগুলো সাথে শুকনো গোবর মিশিয়ে ভালো করে পাটি প্রস্তুত করে নিন ।

তারপর পুই শাখ , করল্লা,চিচিংগা  কিংবা অন্য কোন শাকের বীজ লাগিয়ে দিন । দেখবেন সেটা তরতর করে বেড়ে উঠবে । এ সময় ফল গাছের ডাল পালা হালকা করে ছেটে দিতে হবে । বিষয়টা খুব জটিল কিছু নয় ।







শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০২২

ছাদ বাগানে পাখির গান

ছাদ বাগানের অনেকগুলো প্রাপ্তির মধ্যে একটি হচ্ছে পাখিদের কলকাকলীতে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও হারিয়ে যাওয়া যায়। দোয়েল কোয়েল শ্যামা শালিক নানা প্রজাতির পাখি এসে বসে বিভিন্ন গাছের শাখায় অথবা বাশের আগায়। নানান সুরে গান ধরে। 

ইদানিং কিছু পাখির সাথে আমার অল্প আল্প বন্ধুত্ব হয়েছে। আগে আমাকে দেখলে তারা উড়ে পালাতো এখন আর পালায় না। বুঝে গেছে আমি তাদের জন্য ক্ষতিকারক নই। 



বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০২২

ছাদে ধুন্দল চাষ ও পরিচর্যা

ধুন্দল একটি জনপ্রিয় ও মজাদার সবজি হিসাবে গ্রাম বা শহরে সর্বত্র পরিগণিত হয়ে আসছে । চিংড়ি মাছ দিয়ে ধুন্দল কার না পছন্দ।

মজাদার এই সবজিটি  চাষ করা কিন্তু খুব সহজ । একটু পরিশ্রম করলেই, ছাদের টবে বা ড্রামে খুব সহজেই ধুন্দল চাষ করা যায় । ঢাকা শহরের প্রায় বাসা,বাড়ির ছাদে বা ব্যালকুনিতে এখন টব, ড্রাম বা পুরাতন বালতিতে ধুন্দল চাষ করা হয়ে থাকে । 

ঠিক মতো একটি গাছ বড় করতে পারলে একটি পরিবারের চাহিদা খুব সহজেই পূরণ করে ও প্রতিবেশীদের মাঝে বিতরণ করা যায় ।

আজকের লেখায় আমরা জেনে নিবো সঠিক ভাবে ধুন্দল চাষ করতে হলে আমাদের কি কি করতে হবে এবং কি কি করা যাবে না । চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে ধুন্দল চাষে লেগে যাই ।


সময় :
 
ধুন্দল একটি শীতকালীন সবজি । তবে বর্তমানে ১২ মাস ই জন্মে । সে জন্য চাষ করার আগে জাত নির্বাচন করে নিতে হবে । মনে রাখতে হবে , ১২ মাসি জাত ছাড়া অন্য ধুন্দল গাছে অসময়ে লাগালে ফলন পাওয়া যাবে না ।

মাটি প্রস্তুত : 
 
ধুন্দল সাধারণত দোঁয়াশ মাটি, বেলে দোঁয়াশ মাটিতে ভাল জন্মে । তবে দোঁয়াশ, বেলে দোঁয়াশ মাটি পাওয়া না গেলে এটেল মাটির সাথে দ্বি-গুন হারে গোবর বা কম্পোস সার ও লাল বালি মিশিয়ে ধুন্দল চাষ করা যায় ।  এছাড়া নদীর বালি মাটির সাথে ইটের খোয়া ও শুকনো গোবর মাশিয়েও ধুন্দল চাষ করা যায়। টব,ড্রাম না থাকলে সিমেন্টের বস্তাতে মাটি ভরেও ধুন্দল চাষ করা যায় ।

মাদা তৈরি : 
 
 যে কোন সবজি চাষের জন্য একটি মাদা তৈরি করে নিতে হয় । মাদা হচ্ছে, ড্রাম বা জমির যেখানে চারাটি লাগানো হবে তার চারপাশ থেকে মাটি এনে মাঝখানটি মাটির ঢিবির মতো একটু উচু করে নেওয়া। যেহেতু মাদার উপরে চারাটি রোপন করতে হয় ,তাই মাদার তৈরির পূর্বে মাদার নিচে যথেষ্ঠ পরিমান জৈব সার ও গোবর দিলে ভাল ফলন হয় ।  দোঁয়াশ বা বেলে দোঁয়াশ মাটির সাথে সম পরিমাণে গোবর বা জৈব সার মিশিয়ে মাদা তৈরি করে নিতে হবে । রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে চাইলে , ২শ গ্রাম হারে ইউরিয়া,টিএসপি ও পটাশ ও সামান্য পরিমাণ বোরন সার খুব ভাল করে মিশিয়ে মাটি তৈরি করে । চট বা ছালার বস্তা দিয়ে ১৫ দিন ঢেকে রাখতে হবে । এর পর ঢাকনা তুলে নেড়ে চেড়ে আরো কয়েক দিন রেখে দিলে মাটি তৈরি হয়ে যাবে ।

 

মাটি প্রস্তুত হয়ে গেলে তাতে  তিন থেকে চারটি বীজ রোপণ করে ভাল মতো পানি দিয়ে হালকা কিছু দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে । প্রতিদিন নিয়মিত তাতে পানির ছিটা দিতে হবে । বীজ রোপণের আগে সারা রাত বীজ পানিতে ভিজিয়ে রাখতে অঙ্কুরিত হতে সহজ হবে ।  

বীজ বপনের ৭ থেকে ১০ দিন পরে বীজ থেকে চারা জন্মাবে । এ সময় চারাগুলোকে ঢেকে রাখতে হবে। চারাগুলো একটু বড় হলে । দুটো চারা রেখে অন্যগুলো তুলে ফেলতে হবে ।  একটি মাদায় একটি চারা থাকলে ভাল ফলন পাওয়া যায় । চারা দু'হাত লম্বা হলে তাতে বালাই নাশক স্প্রে করতে হবে । এবংচারা বেয়ে উঠার জন্য মাচা তৈরি করে দিতে হবে । 

মাচা তৈরি :  
 
মনে রাখতে হবে ধুন্দল একটি লতা জাতীয় উদ্ভিদ  তাই । গাছের বৃদ্ধির জন্য । বাঁশ, কঞ্চি দিয়ে ভাল করে মাচা তৈরি করে তাতে নারেকেল গাছের ডাল বিছিয়ে দিলে গাছটি সহজেই বেয়ে উঠতে পারবে। গাছের লতাগুলো দু' তিন হাত বড় হলে প্রত্যেকটি লতার আগা পিন্চিং  করে দিন । এতে নতুন নতুন ডগা বা শাখা প্রশাখা বৃদ্ধি পাবে । মনে রাখবেন , ধুন্দুলের প্রথমে বেরে উঠা শাখাটি থেকে কোন ফলন হয় না । নতুন নতুন শাখা প্রশাখা থেকেই ফলন হয় ।  এই শাখাগুলোকে পিন্চিং বা ভেঙ্গে দেওয়াকেই ওয়ান জি, টু জি, থ্রি জি বলে । জি - মানে জেনারেশন ।

গাছে ফুল চলে এলে ফ্লোরা নামের PGR  (Plant Growth Regulator) স্প্রে করলে ভাল ফল পাওয়া যাবে । এসময় ছাই ছাড়া অন্য কোন প্রকার কীটনাশক ব্যবহার করলে ফসল বিষাক্ত হয়ে যাবে । এবং ফলন কম হবে । 

রোগ বালাই ও পোকামাকড় দমন :  
 
ধুন্দল গাছে ছোট অবস্থা থেকেই পোকা মাকড় ও রোগ বালাইয়ের আক্রমন ঘটে । তাই শুরু থেকেই এ ব্যাপারে যত্ন শীল হতে হবে ।  চারা জন্মাবার আগেই তাই মাটিতে "ফুরাডান" নামের কীটনাশক মিশিয়ে দিতে হবে । তাতে রোগ বালাই পোকার আক্রমন কম হবে । চারা দু হাত লম্বা হলেই , তাতে "নাইটো" নামের কীটনাশক স্প্রে করতে হবে । এর ফলে লেদা পোকা, ছেংগা বা বিছা পোকা , জাব পোকা,মজরা পোকাসহ নানান পোকার আক্রমন হতে গাছকে রক্ষা করা যাবে ।
 
মনে রাখতে হবে , ঠিক মতো পরিচর্যা না করলে গাছ নষ্ট হয়ে যেতে পারে । তাই নিয়মিত যত্ন না করলে গাছ মরে যেতে পারে । মাঝে মাঝে পাতায় পানি স্প্রে করে তারপর ছাই ছিটিয়ে দিতে হবে । এতে জাব পোকা,লিপ মাইনারের আক্রমন থেকে গাছ রক্ষা পাবে । মরা ও পোকায় খাওয়া পাতা ছিড়ে ফেলে দিতে হবে । সেচের মাত্রা অতিরিক্ত হলে গাছে পচন রোগ দেখা দিতে পারে । তাই পরিমান মতো সেচ দিতে হবে ।  ড্রাবে বা টবে গাছ হলে কিছুতেই যেনো জলাবদ্ধতা তৈরি না হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে ।
 

 
 
অধিক ফলন পাবার উপায়
 
প্রখোর রোদের হাত থেকে গাছকে রক্ষা করার জন্য  গাছের গোড়া মালচিং বা ঢেকে দিতে হবে । মালচিং হচ্ছে, খের কুড়া অথবা কচুরি পানা দিয়ে গাছের গোড়াকে ঢেকে দেওয়া । ফলে প্রখোর সূর্যের তাপ থেকে গাছ রক্ষা পায় । গাছের গোড়ার মাটির আদ্রতা ঠিক থাকে ।  খেয়াল রাখতে হবে , টব বা ড্রামের মাটি যেন কিছুতেই শুকিয়ে না যায় । গাছে ফুল চলে এলে, গাছের গোড়া থেকে কয়েক ইন্চি দূরে পাটাশ ও টিএসপি সার প্রয়োগ করলে ভাল ফুল ও ফলের পরিমান বৃদ্ধি পাবে ।  
 
ফল সংগ্রহ : 
 
জাত বেদে গাছ লাগাবার ৪০ থেকে ৫০ দিন পর ধুন্দল সংগ্রহ করা যায় ।  একটি হাফ ড্রামে লাগানো একটি গাছ থেকে প্রায় ৫০ কেজি ধুন্দল পাওয়া সম্ভব ।  ধুন্দল গুকিয়ে গেলে বীজ পাওয়া যায় । শুকনো অংশ ছোবা হিসাবে ব্যবহার করা হয় । 

                                                      
নোট : প্রতিটি ছবি ও লেখা মৌলিক । কোনখান থেকে কপি পেষ্ট করা নয় ।
                                                                                                শেষ ।


মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০২২

ছাদে চাল কুমড়া চাষ ও রোগ বালাই দমন

ছাদে জালি কুমড়া বা চাল কুমড়া চাষ করা খুব সহজ । চাল কুমড়া চাষে খুব একটা পরিশ্রম করতে হয় না । শুধু মাত্র একটি ভাল জাতের কুমড়া গাছ নির্বাচন করে নিতে হবে । 

সময় : 

চাল কুমড়া লাগাবার উপযুক্ত সময় হচ্ছে, ফাল্গুন থেকে আশ্বিন মাস  ইংরেজিতে ,ফ্রেরুয়ারী থেকে মে মাস ।  এ সময় চাল কুমড়া বা জালি কুমড়া লাগালে আকার আকৃতি বড় হয় । 

মাটি তৈরি : 

একটি হাফ ড্রামের সাধরনত ১০০ থেকে ১৫০ কেজি মাটি ধরে । তাই এক একটি হাফ ড্রাম প্রস্তুত করতে ১০০ কেজি মাটির সাথে ৫০ কেজি গোবর সার খুব ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে ।এছাড়া একটি ড্রামে ২০০ গ্রাম ইউরিয়া , ২০০ গ্রাম টিএসপি ও ২০০ গ্রাম পটাশ ও ৫০ গ্রাম বোরন সার মিশিয়ে মাটি ছালা বা বস্তা দিয়ে ১০ থেকে ১৫ ঢেকে রাখতে হবে । তারপর ঢাকনা খুলে ভেতরের গ্যাস বের করে দিতে হবে । এবং সেচ দিয়ে খোলা কয়েক দিন রেখে দিতে হবে ।  

 

সেচ ব্যবস্থা  : 

মনে রাখতে হবে জলাবদ্ধতা এ গাছ একদম সহ্য করতে পারে না । তাই সঠিক নিয়মে সেচ ব্যবস্থা বজায় রাখতে হবে ।  সকাল বিকেল নিয়মিত পানি দিতে হবে । পানি দেওয়ার নিয়ম হচ্ছে, ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে ড্রামের চারপাশে । গাছের গোড়ায় সপ্তাহে একবার হালকা পানির ছিটা দেওয়া যেতে পারে । ড্রামের মাটি যেন কিছুতেই স্যাতস্যাতে না হয়ে যায় সে দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে ।

চারা রোপন : 

মাটি প্রস্তুত হলে , তাতে তিন থেকে চারটা বীজ রোপন করতে হবে । রোপনের আগে বীজগুলো সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে । বীজ রোপন করে সেচ দিয়ে তা আবার ছালা দিয়ে ঢেকে দিলে , ৭ থেকে ১০ দিন এর মধ্যে চারা গজাবে ।  এর পর রুষ্ট পুষ্ট একটি বা দুটো চারা রেখে অন্য চারাগুলো তুলে ফেলে দিতে হবে । চারাগুলো একটু বড় হলে, তার জন্য মাচা তৈরি করে দিতে হবে ।  

পোকা মাকর ও রোগ বালাই দমন : 

চাল কুমড়া গাছে সাধারণত মাছি পোকা ,ফল ছিদ্রকারী পোকা,,জাব পোকা ও পাতা ছিদ্রকারী পোকার আক্রমন দেখা দেয় । তাই শুরু থেকেই এ ব্যাপারে যত্ন নিতে হবে । বাজারে নানান ধরনের কীট নাশক কিনতে পাওয়া যায় । তবে আমি যেটি ব্যাবহার করে খুব ভাল পেয়েছি , সেটি হচ্ছে, "নাইট্রো ৫০৫ ইসি"।

নাইট্রো (NITRO 505),নামের যে কীটনাশক পাওয়া যায় সেটি স্প্রে করতে হবে । নাইট্রো একটি বহুমূখী তরল কীটনাশক । এটি গাছের বাহিরে ও মাটির ভেতরের পোকা মাকড় সমান ভাবে দমন করে । তাই প্রতি মাসে একবার করে পর পর দু'বার ব্যবহার করলে খুব সহজেই পোকা মাকড় দমন হয়ে যাবে । 

এছাড়াও চাল কুমড়া গাছের গোড়া পচা রোগ দেখা দিতে পারে তাই সেচের দেওয়ার ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে । ড্রামে বা টবে যেনো পানি আটকে থাকতে না পারে সে ব্যাপারে বিশেষ খেয়াল রাখতে হব। এছাড়াও কুমড়া গাছে মোজাইক রোগ দেখা দিতে পারে ।  এ রোগের পাদুভাব ঘটে মাটিতে ছত্রাকের আক্রমনের কারণে । এ সময় গাছের গোড়ায় পটাশ সার ও ফুরাডান ,টিএসপি প্রয়োগ করতে হবে । এছাড়া ছত্রাক নাশক প্রয়োগ করতে হবে । 

ফল সংগ্রহ : 

গাছ লাগাবার ৪০ থেকে ৫০ দিন পর গাছ হতে ফল সংগ্রহ করা যায় ।  চাল কুমড়া একটি পুষ্টিগুন সর্ম্পন সবজি  এ তে প্রচুর পরিমানে, ক্যালরি , মিগ্রা ক্যালসিয়াম ও খনিজ পর্দাথ রয়েছে । চাল কুমড়া বা জালি কুমড়া থেকে মুখরোচক মোরব্বা তৈরি করা হয়ে থাকে । যা চড়া মূল্যে মিষ্টির দোকানগুলোতে বিক্রি হয় । 

                                                                           শেষ ।

বেশি করে গাছ লাগান পরিবেশ বাচান । গাছ প্রেমিক ই দেশ প্রেমিক ।

বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০২২

ছাদের ড্রামে ডালিম চাষ ও পরিচর্যা

 

ছাদে একটি ডালিম গাছ না থাকলে বাগানটি যেন অপূর্ণ থেকে যায় । আর যদি গাছ ভর্তি ডালিম থাকে ! তাহলে তো আর কথাই নেই । খুব সহজেই কিন্তু আমাদের এই ইচ্ছেকে বাস্তবে রূপ দেওয়া যায় । মাটির মতোই ছাদে ডালিমের ফলন খুব ভালো হয় । গাছ লাগাবার পরের বছর থেকেই গাছ থেকে ফল আহরণ করা যায় । এছাড়া ডালিম গাছের খুব একটা পরিচর্যা ও লাগে না ।

প্রস্তুতি কিভাবে নিবেন :  

অন্য ফলের গাছের মতোই ছাদে ডালিম চাষের জন্য আমি সাজেশন দিবো , একটি বড় ড্রাম নির্বাচন করার জন্য । কারণ যে কোন ফলের গাছ ই বড় পাত্রে ভাল জন্মে ।  ড্রামের নিচে পানি নিষ্কাশন এর জন্য অবশ্যই চার থেকে পাঁচটি আঙুল সাইজের ফুটো করে নিতে হবে । ফুটোগুলো মাটির হাড়ির ভাঙ্গা টুকরো দিয়ে ঢেকে দিয়ে , তার উপরে ইটের খোয়া দিয়ে একটি লেয়ার তৈরি করে তার উপর দালান করার বালু ছিটিয়ে দিয়ে মাটি দিতে হবে । তবেই পানি সহজে বের হয়ে যেতে পারবে ।

মাটি : 

 বেলে দোয়াশ,এটেল সব মাটিতেই ডালিম জন্মে । তবে ড্রামে ডালিম চাষের জন্য , ৫০ ভাগ এটেল বা দোয়াশ মাটির সাথে ২৫ ভাগ নদীর বালি ও ২৫ বার্মি কম্পোস্ট মিশিয়ে নিলে খুব ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে । ড্রামে মাটি দেওয়ার আগে তা ভাল করে রোদে শুকিয়ে নিন ।  ড্রামে মাটি দেওয়ার আগে তাতে অবশ্যই ১০০ গ্রাম চুন মিশ্রন করে নিতে হবে ।  

যদি রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে চান তাহলে , একটি হাফ ড্রামের জন্য ২০০ গ্রাম ইউরিয়া,২০০ গ্রাম টিএসপি,২০০গ্রাম পটাশ সার মিশিয়ে তা ড্রামে রেখে ১০ থেকে ১৫ দিনের জন্য ঢেকে দিন । ১৫ দিন পর তা নেড়েচেরে দিয়ে তাতে চারা লাগাতে পারেন । 

চারা নির্বাচন : 

ডালিম বা আনাড়ের জন্য চারা নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এ জন্য বিশ্বস্ত কোন ব্যক্তি বা নার্সারির কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করতে হবে । 

মূল্য : 

একটি ভাল মানের চারা ২০০ টাকার বেশি হবার কথা নয় তবে নার্সারিতে ৩ থেকে ৫শ টাকা নিবে । 

পরিচর্যা : চারা কিনে আনার পর সেটি সাথে সাথে টবে বা ড্রমে লাগাবেন না । ভাল মানের একটি ফাঙ্গি সাইট স্পে করে ছাদের একটি ছায়া যুক্ত স্থানে রেখে দিতে হবে । এর ফলে চারাটি একদিকে যেমন জীবানু মুক্ত হবে অন্যদিকে সেটি নতুন পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারবে । 

ডালিম গাছের জন্য বার বার পট চেন্জ করার কোন প্রয়োজন নেই । বড় ড্রামেই চারাটি ড্রামের ঠিক মাঝখানে লাগিয়ে দিন । 


 

সাবধানতা :  

কড়া বা ঝুম বৃষ্টিতে কোন চারা লাগাবেন না । তাতে চারাটি মারা যাবার সম্ভাবনা থাকে । চারা লাগাবার পর নিয়মিত পানি দিয়ে যেতে হবে । পরিচর্যা করুণ ।  ধীরে ধীরে চারাটি বড় হবে থাকবে । ডালিম বা আনাড়ের চারা সাধারণত লম্বালম্বি বড় হয় । আগা কেটে দিন । তাহলে পাশে নতুন ডালপালা ছাড়বে । একটু বড় হলে, কীটনাশক স্প্রে করুণ ।  বাজারে "নাইট্রো" নামের একটি কীট নাশক পাওয়া যায় । এটি ভাল কাজ করে । প্রথম ব্যবহারের ১৫ দিন পর আবার ব্যবহার করুণ ।  কীটনাশক বিকেলে বা সন্ধ্যায় প্রয়োক করুণ । 

ফল : 

প্রথম বছর ফল না নেওয়াই ভাল । ডালিম জাত ভেদে বছরে দু থেকে তিনবার ফলন দেয় । ফুলের কলি থাকা অবস্থায় এসিআই কোম্পানির "ফ্লোরা" নামের পিজিআর একবার স্প্রে করুণ । ফল গুটি বাঁধলে আরেক বা ব্যবহার করতে হবে ।এ সময় নিয়মিত পানি দিয়ে যেতে হবে । তবে খেয়াল রাখতে হবে । ড্রামে পানি যেন আটকে না থাকে । ড্রেনের ড্রেনজ ব্যবস্থা ভাল থাকতে হবে ।ড্রামের উপরি ভাগের মাটি শুকিয়ে গেলেই ক্যাবল পানি দিতে হবে । মাটিতে আঙুল ঢুকিয়ে দেখে নিন ভেতরের মাটি ভেজা আছে কিনা ।পানি দেবার উপযুক্ত সময় হচ্ছে, ভোরে কিংবা রাতে । ড্রামের কিনার ঘেষে পানি দিন । মাঝে মাঝে গোড়া হালকা পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে । এতে গাছের স্বাস্থ্য ভাল থাকবে ।গোড়া পচা রোগ হবে না । 


 

সার প্রয়োগ : 

যেহেতু শুরুতেই সার প্রয়োগ করা হয়েছে সেহেতু প্রথম বছর কোন প্রকার সার প্রয়োক করার প্রয়োজন নেই । তবে মাঝে মাঝে ষরিষার খৈইর ভেজানো পানি এক লিটার দশ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে । গাছের চারিপাশে দেওয়া যেতে পারে ।  তবে গাছের গোড়ায় না দেওয়াই ভাল । গাছে ফুল ফল থাকলে চার থেকে পাচ চামচ পটাশ সার দিতে হবে ।  শুকনো গোবর সার উপরি ভাগে ছড়িয়ে দিতে তা মাটির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি করবে । 


ফল পেকে লাল বর্ণ ধারন করলে তা কেটে সংগ্রহ করতে হবে । ফল সংগ্রহের সপ্তা খানেক পর গাছ ছেটে দিন । নতুন শাখা প্রশাখা বের হয়ে গাছ আরো শক্তিশালী হবে ।  

                                                                                      শেষ

কলা চাষ

 

সৌখিন ছাদ বাগানিদের ছাদে একটি কলা গাছ না থাকলে বাগানের সৌন্দর্য যেনো পরিপূর্ণ হয় না ।কলা গাছ বাগানের সৌন্দর্য অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয় । তবে ছাদের ড্রামে কলা চাষের জন্য একটু সর্তক থাকতে হবে স্থান নির্বাচন নিয়ে ।  কেননা ঝড় বৃষ্টির কারণে কলা গাছের যেন ক্ষতি না হয় সেটা কলাগাছ রোপনের সময় ই খেয়াল রাখতে হবে । ছাদের এমন একটি স্থানকে কলা গাছ রোপনের জন্য বেছে নিতে হবে । যেখানে ঝড়, বৃষ্টি ও বাতাসের প্রভাব কম হবে । ছায়া যুক্ত স্থানে কলা গাছের জন্য মোটেও ক্ষতিকর নয় । বরং ছায়া যুক্ত স্থানের কলা সুমিষ্ট হয় বেশি । 

আমরা জানি কলা একটি , গ্রীস্মকালীন ফল তবে সারা বছর ই পাওয়া যায় । তবে গ্রীস্মকালে কলার আকার আকৃতি বড় হয় হয়ে তাতে পুষ্টিগুন বেশি থাকে । শীত কালে কলার আকার চুপসে যায়। এবং তাতে পুষ্টিগুন কম থাকে । 

প্রজাতি :  বাংলাদেশে প্রায় ১৫ প্রজাতিত কলা পাওয়া যায় । ছাদ বাগানের জন্য দেশি কাঠালি কলার ভাল ফলন হয় । কারণ এ প্রজাতি কষ্ঠসহিংসু ।

মাটি প্রস্তত :  যে কোন মাটিতে কলা জন্মে । তবে ছাদে কলা চাষের জন্য একটি হাফ ড্রাম বেছে নিতে হবে । 

ড্রামের অধেকটা মাটি ও বাকি অধেকটা শুকনো গোবর ও আধা কেজি পরিমানে চুন দিয়ে খুব ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে । এছাড়া ও ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া,২০০ গ্রাম টিএসপি ও ২৫০ গ্রাম পটাশ মিশিয়ে ১৫ দিনের জন্য চট বা ছালা দিয়ে ড্রামের মধ্যে ঢেকে রাখতে হবে । ১৫ দিন পর ড্রাম থেকে চট সরিয়ে নিয়ে মাটি নাড়াচাড়া দিয়ে ৫-৭ দিন রেখে দিতে হবে । এতে মাটিতে থাকা সারের গ্যাস বেড় হয়ে যাবে । এ সময় মাটিতে ২৫০ গ্রাম পরিমানে ফুরাডান সার ছিটিয়ে দিয়ে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে । 

চারা রোপন : 

মাটি প্রস্তুতের পর তাতে রুষ্টপুষ্ট দেখে একটি চারা ড্রামের ঠিক মাঝখান লাগাতে হবে । এতে চারপাশে জল সেচ ও খাবার দেওয়া সহজ হবে । চারা রোপনের উপযুক্ত সময় হচ্ছে, জানু - মার্চ । তবে অন্য সময় ও রোপন করা যায় । তবে আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি , এমন একটি সময় চারা রোপন করুন , যাতে শীতের সময় গাছে ফলন না আসে । এর জন্য শীতে কলা গাছ না লাগানোই ভাল । কলাগাছে সাধারণত এক বছরে ফলন আসে ।  তাই শীতে গাছ লাগালে দেখা যায় শীতেই ফলন আসে । 

রোগ বালাই :  

কলা গাছে নানান রকম রোগ বালাই দেখা দেয় । তবে জমি থেকে ছাদে রোগ বালাইয়ের পরিমান কম । শুরু থেকে সর্তক থাকলে এবং ঠিক মতো পরিচর্যা করলে এইসব রোগ বালাই থেকে বেঁচে থাকা যায় ।কলা গাছে সাধারণত যে সকল রোগ বালাই দেখা যায় সেগুলো হলো,পানামা রোগ,মাকো রোগ,পাতা পোড়া রোগ ,পাতার দাগ বা সিগাটোকা রোগ,গোড়া ফাটা রোগ, গোড়া পচা রোগ ইত্যাদি । নিয়মিত ফাঙ্গিসাইট ও কীট নাশক ব্যবহার করলে সহজেই সকল রোগ হতে কলা গাছকে রক্ষা করা যায় ।

কলা গাছের পরিচর্যা  : 

আমি যে প্রদ্ধতি বলেছি সে ভাবে মাটি তৈরি করে নিলে গাছের খুব একটা যত্ন বা পরিচর্যার প্রয়োজন হবে না ।  শুধু  সপ্তাহে একটি ড্রাম ভর্তি করে পানি দিলেই হবে ।এ সময় খেয়াল করবেন । ড্রামের পানি নিস্কাষন ব্যবস্থা যেন ভাল হয় । অতিরিক্ত পানি ড্রামের নিচের ফুটো দিয়ে বের হয়ে যায় । কারণ জলাবদ্ধতা সকল রোগ বালাইয়ের কারণ ।

চারা রোপনের ৬ মাস পরে গাছে জৈব সার দিন । এ সময় থেকে গাছে সরিষার খৈর ভেজানো পানি দিনে মাসে একবার ।  ৬ মাস পরে গাছে আবারো ১০০ গ্রাম ইউরিয়া , ১০০ গ্রাম টিএসপি ও ২০০ গ্রাম পটাশ সার , দুমাসের ব্যবধানে ব্যবহার করুন ।  আট থেকে ১০ মাসে আরেক বার । 

সম্ভবত দশম মাসে গাছে মোড়চা আসবে । এ সময় গাছে আর সার ব্যবহার করবেন না । তবে খৈর ভেজানো পানি দিয়ে যেতে হবে ।  

গাছে মোরচা এলে তাতে কিটনাশক ও ছত্রাক নাশক ছিটিয়ে দিতে হবে । প্রথমে কীট নাশক পরের মাসে ছত্রাক নাশক দিতে হবে । এভাবে পরপর দু বার করে ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে ।  

কলার থোর থেকে সব কলা বের হয়ে গেলে মোড়চা আগাটি কেটে ফেলুন ।  এতে কলা আকার বড় হবে । কলা একটি মোটামুটি আকৃতিতে আসলে , বড় একটি ব্যাগ দিয়ে কলা মুড়ে দিতে হবে । এতে কলায় দাগ ও পোকা মাকড়ের আক্রমন হবে না ।  

কলা সংগ্রহ : 

১২ তম মাসে কোন কোন সময় ১৪ তম মাসে কলা সংগ্রহ করা যাবে । গাছের কলা হলুদ র্বণ ধারন করলে তা কেটে সংগ্রহ করুন ।  কাটা কলা গাছ ফেলে না দিয়ে তা অন্য একটি ড্রামে রেখে দিত তা পোচে জৈব সার পরিনত হবে । 

                                                                                     শেষ । 


ছাদে মরিচ চাষ

 

ছাদে মরিচ চাষ করতে চাইলে আমার মাটি প্রস্তুতের ব্যাপারে একটু বেশি খেয়াল রাখতে হবে । কারণ নরম ও ঝুরঝুরে মাটিতে যে কোন মরিচ গাছ খুব ভাল জন্মে এবং ফলন ও খুব ভাল হয় । মরিচ সাধারণত শীতকালিন সবজি হলেও বর্তমানে সরা বছরই মরিচ জন্মে ।

মাটি প্রস্তুত :  অধিকাংশ ছাদ বাগানির অভিযোগ থাকে তাদের গাছে ঠিক মতো মরিচ হয় না । কোন রকম গাছ বড় হলেও পাতা কুকড়ে যায় । পোকা মাকড়ের আক্রমন বেশি হয় । এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে মাটি প্রস্তুতের ব্যাপারে বিশেষ যত্নবান হতে হবে । আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, অন্য গাছের তুলনায় মরিচের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম । তাই শুরু থেকে ই যত্ন বান না হলে , মরিচ চাষে ভালে রেজাল্ট পাওয়া যাবে না ।  যে মাটিতে মরিচ চাষ করবেন বলে ঠিক করেছেন , সেটি কড়া রোদে কম করে ১০ থেকে ১৫ শুকিয়ে নিতে হবে । মাটি শুকিয়ে খটখটে হয়ে গেলে সেটি পিটিয়ে ঝুরঝুরে করে নিয়ে তাতে সম পরিমান শুকনো গোবর বা ভার্মি কম্পোস্ট সার মিশিয়ে আবার রোদে শুকাতে হবে ।  এভাবে আরো কয়েক দিন রোদে শুকাবার পর তাতে ১০০ গ্রাম ফুরাডান ও জীবানু নাশক ও ফাঙ্গাস নাশক ওষুধ দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে টবে বা বালতিতে মাটি তুলে ফেলতে হবে । ছাদে মরিচ চাষের জন্য পাত্র একটি বড় ভুমিকা রাখে । পাত্র বড় হলে মরিচ ভাল হয় । এ জন্য একটি পুরাতন বালতি বেছে নিলে ভাল ফল পাওয়া যাবে । 

চারা তৈরি : বাজার বা নার্সারি থেকে চারা কিনে না এনে আমি বলবো, নিজে চারা তৈরি করুণ ।  ভাববেন না , মরিচ চারা তৈরি করা খুব সহজ । এ জন্য শুকনো মরিচ বা নাগা মরিচ থেকে বীজ বের করে নিন । বীজগুলো দু একদিন কড়া রোদে শুকিয়ে নিন । মনে রাখবেন ছাদ বাগানিদের জন্য রোদ হচ্ছে, সর্ব রোগের ওষুধ । শুকিয়ে নেওয়া বীজ গুলো একটি কাপের হাফ কাপ পানির মধ্যে আধা চামচ টেটল বা সেভনল দিয়ে ভিজিয়ে রাখুন । এতে বীজে পরিশোধীত হবে । ফলে গাছে ফাঙ্গাস এর্টাক হবে না । সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে বীজগুলো পূর্বে প্রস্তুত করা মাটি থেকে কিছু অংশ একটি বোলে বা পাত্রে রেখে তাতে বীজগুলো বুনে দিন । এটিই হলো আপনার বীজ তলা । বীজ লাগাবার ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে চারা বের হয়ে আসবে ।  তখন চাগুলোকে নেট জাতিয়ে কিছু দিয়ে ঢেকে দিতে হবে । তা না হলে , চড়ুই পাখি চারা খেয়ে ফেলতে পারে । চারাগুলো একটু বড় হলে , তাতে ফাঙ্গিসাইট স্প্রে করতে হবে । এর সপ্তাহখানেক পর চারাগুলো মূল পাত্রে রোপন করে দিনে । এসময় একটু বেশি খেয়াল রাখতে হবে । 

পরিচর্যা : ছাদে মরিচ গাছ হচ্ছে, আহ্লাদী গাছ । ঠিক মতো পরিচর্যা না করলে মরে যায় । যেহেতু মাটি ঠিক মতো প্রস্তুত করে নিয়েছেন, তাই গাছ নিয়ে খুব একটা ঝামেলায় পরতে হবে না । সঠিক নিয়মে পানি সেচ দিলেই চলবে ।  মরিচ গাছ খুব বেশি পানি পছন্দ করে না । তাই মাটি শুকিয়ে গেলেই পানি দিন । গাছের পাতায় পানি দিবেন না । গোড়ার চারপাশে পানি দিন । এতে গাছে রোগ বালাই কম হবে ।

রোগ বালাই : মরিচ গাছের সবচেয়ে মারান্তক রোগ হচ্ছে , পাতা কুচকে যাওয়া । গাছ একটু বড় হলে এ রোগে আক্রান্ত হয়। একবার আক্রান্ত হলে,গাছ তুলে ফেলে দেওয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় থাকে না । তবে যেহেতু আমরা মাটি খুব ভাল করে প্রস্তুত করে নিয়েছি তাই আশা করছি এ রোগে আমাদের গাছ আক্রান্ত হবে না । এছাড়াও মরিচ গাছ গোড়া পচা রোগে আক্রান্ত হয় । এটি হয় অতিরিক্ত পানি দেওয়ার করনে । তাই পানি দেওয়ার ব্যাপারে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে । নিয়োমিত সারফ ও নাইট্রো নামের কীট নাশক ব্যবহার করতে হবে । 

মরির গাছের আর একটি সমস্যা হচ্ছে, ফুল ঝরে যাওয়া । এটিও হয় পানির তারতম্য হওয়ার করনে । তাই মরিচ গাছে ফুল আসার আগে ও মরিচ দানা বাধার পরে গাছে ফ্লোরা নামের পিজিআর স্প্রে করতে হবে । 






ছাদে পেয়ারা চাষ


ছাদে পেয়ারা চাষ করতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে বেছে নিতে হবে একটি ৫০ লিটারের ড্রাম । পেয়ারা গাছের শেকড় মাটির অনেক গভীরে যায় । তাই বড় ড্রাম হলে ফলন ভাল পাওয়া যায় । বর্তমানে ১২ মাসি জাতের পেয়ারার গাছ পাওয়া যাচ্ছে । তাই


বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০২২

ছাদ বাগানের শুরুটা কিভাবে করবেন ?

নাসার্রী থেকে কেনা আনাড় গাছ

ধরেই নিলাম আপনি প্রচন্ড ব্যস্ত একজন মানুষ । কিন্তু মনে মনে আপনি প্রকৃতি পছন্দ করেন । ফুল,পাখি,গাছ, পালা, তরু লতা আপনার ভাল লাগে ।  এর মানে হচ্ছে ,আপনি একজন প্রকৃতি প্রেমি মানুষ। 

সব মানুষের মধ্যেই অবশ্য প্রকৃতির প্রতি কম, বেশি আগ্রহ বা ভালবাসা থাকে । সময়, সুযোগ থাকলে প্রকৃতির সানিধ্যে সময় কাটাতে কে না চায় বলুন?

যদি  সত্যিই আপনি একটি ছাদ বাগান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তাহলে এ লেখাটি আপনার জন্য । লেখাটিতে আমার অভিজ্ঞার আলোকে কি ভাবে একটি ছাদ বাগান তৈরি করা যায় তা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি ।

 

 

 ছাদ বাগান তৈরি করার জন্য কিভাবে প্রস্তুতি নিবেন :-

বাগানের শুরুটা করার জন্য আপনাকে একটি প্রস্তুতির ভেতর দিয়ে যেতে হবে । মনে রাখবেন, আপনার প্রস্তুতি যতো ভাল হবে আপনার ছাদ বাগান ততোবেশি সুন্দর ও ন্যাচারাল হবে ।

শুরুতেই ছাদটি পরিস্কার করে ফেলুন ।  সম্ভব হলে, ছাদ ঝাড়ু দিয়ে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিন । এর ফলে আপনার ছাদ জীবানু মুক্ত হবে । গাছ লাগাবার জন্য ছাদের একটি ছায়া যুক্ত অংশ বেছে নিন ।

শুরুতেই ঠিক  করে নিন কি ধরনের গাছের বাগান আপনি গড়ে তুলতে চাইছেন । 

ক. #ফুলের বাগান ,খ. #ফলের বাগান,গ. #সবজির বাগান ,ঘ. #ফুল, ফল  ও সবজির ভ্যারাইটি বাগান । 

আমি বলবো, শুরুটা করুন ফুল ও সবজি দিয়ে ।  কারণ ফলের বাগান এর জন্য আপনার কিছু কৃষি বিভিক জ্ঞানের প্রয়োজন হবে ।  সেটা ফুল ও সবজি চাষের মধ্য দিয়ে অর্জন করতে পারবেন ।  একটি বাগানে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয় । নিজেস্ব জ্ঞান ও বুদ্ধি দিয়ে সে সব সমাধান করতে হবে । 

ছাদে ধুন্দল চাষ

 পাত্র নির্বাচন  :_

বিভিন্ন সাইজের, ছোট বড় ড্রাম,টব,পুরাতন বালতি দিয়ে শুরুটা করতে পারেন । আমি বলবো, শুরুটা করুন টব এবং বালতি দিয়ে । ধরুন আপনি পাচটি গাছ লাগাবেন । সেক্ষেত্রে আপনি সাতটি পাত্র কিনুন বা যোগার করুণ । কেন অতিরিক্ত দুটো পাত্র কিনবেন , সেটা পরে বলবো । 

টব ড্রাম বা বালতির মূল্য কত :  

একটি ১০০ লিটারের ড্রামের মূল্য ১০০০ থেকে ১২শ টাকা । মাঝখান থেকে কেটে নিতে হবে । তাতে দুটো ড্রাম পাবেন । ৫০ লিটারের একটি ড্রামে মাটি লাগবে, ৫০ কেজি সিমেন্টের বস্তার পাচ থেকে সাত বস্তা মাটি । অথাৎ ৫০ লিটারের একটি ড্রাম প্রস্তুত করতে প্রায় ১২শ টাকা খরচ হয়ে যাবে । তবে ভয় পাবেন না । আপনি শুরু করবেন, ঘরের পুরাতন বালতি অথবা টব দিয়ে । এক বস্তা মাটি কিনলে তা দিয়ে তিনটি ১২ ইঞ্চি টব অনায়াসে ভরে যাবে । আর ১৪ থেকে ২০ লিটারের বালতি হলে , দুটি বালতি ভরতে পারবেন । টবের , দাম পরবে ১শ থেকে ১শ ২০টাকা । এছাড়া ১৪ লিটারের রং এর বালতি পাওয়া যায় । দাম নিবে ৭০ থেকে ১০০টাকা ।

৫০ লিটারের একটি ড্রাম । মাটিসহ প্রস্তু করতে প্রায় ১২শ টাকা লেগে যায় ।

মাটি প্রস্তুত

পাত্র নির্বাচনের পর মাটি প্রস্তুত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এ জন্য আপনাকে একটু পরিশ্রম করতে হবে ।  শহরগুলোতে হুট করেই মাটি পাওয়া যায় না ।  তাই মাটি যোগার করার জন্য আপনাকে একটু বেগ পেতে হবে ।  তবে হতাশ হবেন না । আমি বলে দিচ্ছি মাটি কোথায় পাবেন ।

বাংলাদেশের প্রতিটি শহরেই এখন গড়ে উঠেছে , ছোট বড় নানা ধরনের নার্সারি । আর এইসব নাসার্রীগুলোতে মাটির বস্তা কিনতে পাওয়া যায় । শুরুতে আপনাকে সেখান থেকেই দু তিন বস্তা বা প্রয়োজন মতো মাটি কিনে এনে শুরু করতে হবে ।  সাথে কিন্তু এক বস্তা শুকনো গোবর কিনতে ভুলবেন না । মনে রাখবেন, প্রতি ৩ বস্তা মাটির জন্য এক বস্তা গোবর । নার্সারীর লোকেরা গোবর মিশ্রিত মাটি বিক্রি করে চড়া মূল্য , তাতে সামান্যই গোবর থাকে । আপনি সেটা কিনবেন না । তিন বস্তা শুধু মাটি ও এক বস্তা গোবর আলাদা কিনে বাসায় নিয়ে নিজে মিশিয়ে নিবেন । এতে ফলাফল ভাল পাবেন। 

ছাদে লেবু চাষ

মাটির বস্তার মূল্য কত :  

নার্সারীগুলো গোবর মিশ্রিত মাটি বিক্রি করে দেড়শো থেকে দুশো টাকা । শুধু মাটি বিক্রি করে ১শ থেকে ১শ ২০ টাকা । শুধু মাটি ১শ টাকা । দরাদরি করলে, ১শ টাকায় গোবর মিশ্রিত মাটি কিনতে পারবেন । শুধু মাটি ৮০টাকা করে নিবে । নিয়মিত কিনলে, আরো কমে পাবেন । আমি ৬০ টাকা করে শুধু মাটির বস্তা কিনি । শুকনো গোবরের বস্তা কিনি ৮০ টাকা করে ।

এখানে একটা উপদেশ দিবো, বর্তমানে ছাদ বাগান নিয়ে নানা প্রতারণা হচ্ছে । তাই বলবো, আপনার বাগানের জন্য অন লাইন থেকে একটি জিনিস ও কিনবেন না । কিনলেই ঠকবেন ।

বাগানের জন্য গাছের যোগার :

ছাদ ও টব প্রস্তুত করার পর নার্সারি থেকে বিভিন্ন ফুলের গাছ কিনে আনুন ।চাহিদা মতো গাছ ফুল ও ফলের গাছ নার্সারীগুলোতে পেয়ে যাবেন । মূল্য নিবে ,৬০টাকা থেকে ২শ টাকার মধ্যে । তবে দামাদামি করতে হবে । মনে রাখবেন, আপনার আবেগ নিয়ে অন্যে প্রতারণার ফাদ পেতে বসে আছে । শহরের নাসারীগুলোতে যে গাছ বিক্রি হয়ে ১শ টাকা সেটি তাতে ক্রয় মূল্য হয়তো ২০ টাকা । কিন্তু আপনার কাছে দাম চাইবে ৩শ টাকা । আপনি আধেক বললেই দিয়ে দিবে । এটাই তাদের প্রতারণা । নার্সারীতে গেলে দু,তিনটে গাছে একসাথে বাছুন । তারপর একসাথে দাম বলুন , দু থেকে তিনশ টাকা । তাই ৩শ টাকা দাম চাইলে , 

এ গোলাপ গাছটি ৬০ টাকা দিয়ে কেনা । দাম চেয়েছিলো ২শ টাকা ।

শাক, সবজির জন্য কি করবেন :  

শাক,সবজির গাছ কখনোই নাসারী থেকে কিনবেন না । নিজে বীজ রোপন করে চারা তৈরি করুণ । বাজারে বীজ কিনতে পাওয়া যায় । বীজের প্যাকেট মূল্য ২০ টাকা থেকে ৮০ টাকা । 

সবজির জন্য অবশ্যই আপনাকে একটি মাচা তৈরি করে দিতে হবে । এ জন্য যোগার করতে হবে , বিভিন্ন সাইজের বাশ ,দড়ি ও অন্য বড় গাছের কাটা ডালের অংশ । মাচা বেধে তাতে নারেকেল বা অন্য বড় গাছের কাটা ডালের অংশবিছিয়ে দিয়ে তাতে সবজি গাছ বাইয়ে দিতে হবে । 

ছাদে করল্লা চাষ

কিভাবে চারা তৈরি করবেন : 

চারা তৈরি করা খুবই সহজ । একটি বড় বালতি বা  পাত্রে আপনার কিনে আনা মাটিতে গোবর মিশ্রিত করে । দশ থেকে পনেরো দিন রেখে দিন । তারপর তাতে  দু তিনটে করে বীজ রোপন করে দিন ।  প্যাকেট থেকে বীজ বের করে দু'তিন ঘন্টা ভিজিয়ে রাখলে অংকুরিত ভাল হয় । চারা অংকুরিত হবার আগ পর্যন্ত নিয়মিত পানির ছিটা দিন । 

এক সপ্তাহ্ থেকে দশ দিনের মধ্যে বীজ থেকে চারা বের হবে । চারাগুলো ছায়া যুক্ত স্থানে রাখুন । নিয়মিত পানি দিন । চারাগুলো একটু বড় হলে , তা অন্য টবে বা বালতিতে লাগিয়ে দিন । 

Eggplant বা বেগুন গাছ মূল্য ৫ টাকা 

ফুল, ফলের গাছ কেনার পর যা করবেন :

গাছ কিনে এনেই টবে বা বালতিতে লাগিয়ে ফেলবেন না । দু'থেকে তিন দিন রেখে দিন । এর ফলে সে নিজেকে নতুন পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিবে । 

গাছ কিনে আনার পর সেটিকে জীবানু মুক্ত করা একান্ত প্রয়োজন । কেননা নাসারিতে অনেক গাছের সাথে থাকার ফলে সেটাতে নানান প্রকার জীবানু ও কিট পর্তঙ্গ সংক্রামন ঘটতে পারে ।  ফলে আপনার বাগানে থাকা অন্যান্য গাছগুলো সহজেই সেটি থেকে আক্রান্ত হতে পারে ।  

ছাদে পেয়ারা চাষা

 এ জন্য অবশ্য আপনার স্টকে বিভিন্ন কীর্টনাশক ও জীবানুনাশক থাকতে হবে । ভয় পাবেন না । এসব আস্তে আস্তে যোগার হয়ে যাবে। আমার ছাদ বাগানের শুরুতে কীর্টনাশকের মূল্য শুনে চমকে উঠে ছিলাম । এখন আমার কাছে সেসব আর দামী মনে হয় না । 

কলা গাছ । নাসারীতে গেলে ৩শ থেকে ৫শ টাকা মূল্য চায় । 

  

গাছের পরিচর্যা : - 

গাছ তো লাগালেন । এবার পরিচর্যা শুরু করুন । যেহেতু ছাদে বাগান । তাই নিয়ম করে প্রতিদিন পানি দিতে হবে । সকাল কিংবা সন্ধ্যা যে কোন এক বেলা নিয়ম করে পানি দিন । পানি দেবার আগে ,মাটিতে আঙুল দিয়ে মাটিতে পানির পরিমাপ দেখে নিন । সেই অনুযায়ী পানি দিন । 

পোকা মাকড় দমন :

গাছ থাকলে পোকা মাকড় আসবেই । তাই সেসব দমন করার পৌস্তুতি রাখতে হবে । বাজের বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক কিনতে পাওয়া যায় । মূল্য ৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত । এ জন্য  Google এ ACI এর ওয়েব সাইট থেকে কিটনাশকের মূল্য , কার্যকারীতা , উপকার অপকার জেনে নিন । মনে রাখবেন , কীর্টনাশক কিন্তু সকল কিছুর জন্যই ক্ষতিকর তাই এগুলো সাবধানে ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহারের পূর্বে মাত্রা থেকে ও বুঝে নিতে হবে । ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে হাত ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে ।সকল প্রকার কীটনাশক শিশুদের কাজ থেকে দূরে রাখতে হবে ।



ছবি ও লেখার জন্য কপিরাইট 

ইন্জি.সাখাওয়াত হোসেন 

E-mail : shakhawat19@gmail.com



আমার ছাদ বাগানের শুরুটা যেভাবে হয়েছিল

সখের বশে ছাদ বাগান শুরু করেছিলাম ।
প্রথমে উদ্দেশ্য ছিলো,নিজের হাতে করা শাক, সবজি চাষ করে পরিবারের চাহিদা পূরণ করবো । শুরুটা হলো ধুন্দল, লাউ, চাল, কুমড়ো, করল্লা, পুইশাক,লাল শাক,কাঁচামরিচ ,শসা ,পালং শাক ইত্যাদি দিয়ে ।

 প্রথমে বছরে আল্লাহ্‌'র রহমতে চিন্তাতীত সাফল্য পাওয়ায় ছাদে চাষাবাদের প্রতি আমার আগ্রহ বেড়ে গেলো ।  

৫০ লিটারের একটি ড্রাম দিয়ে শুরু করা সেই ছাদ বাগানে আজ প্রায় ৩০ টি ড্রামে শোভা পাচ্ছে নানা রকমের ফুল ও  ফলের গাছ । 

যেহেতু ব্যক্তি জীবনে আমি একজন আইটি বিশেষজ্ঞ । কাজ করি বাংলাদেশ আমর্ড ফোর্সের একটি প্রতিষ্ঠানে আইটি বিভাগের প্রধান হিসাবে । তাই কর্মের করণে আমাকে সারাদিন ব্যস্ত থাকতে হয় ।  বাগানের জন্য কাজ করার সময় মেলে সন্ধ্যার পরে বা রাতে । তবে শুক্র শনিবারগুলো এখন আমার কাছে যেন আর্শিরবাদ হয়ে আসে । কারণ এ দুটি দিন আমার বন্ধ থাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিজ বাগানের জন্য কাজ করতে পারি। 

ছাদ বাগান অন্যের চোখে দেখতে যতোটা নয়ন মুগ্ধকর হয় বাগানীর জন্য কিন্তু ততোটাই কষ্ট সাধ্য একটি কাজ । কারণ বাগানের পরিচর্যায় পর্যাপ্ত সময় ও শ্রম দিতে না পারলে মাস খানেকের মধ্যেই সব কিছু রোদে পুড়ে, বৃস্টিতে ভিজে শেষ হয়ে যাবে ।  

ছাদ বাগানে প্রতিটি মূর্হুতে প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে হয় । তাই যথেষ্ট ধৈয্য ও অর্থ ব্যয় করার মন মানসিকতা না থাকলে ছাদ বাগান করে সফল হওয়া যাবে না ।  মনে রাখতে হবে মানসিক তৃপ্তিটাই ছাদ বাগানীদের জন্য শেষ কথা ।

ছাদ বাগানে প্রতিটি মুহূর্তে প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে হয় । তাই যথেষ্ট ধৈর্য ও অর্থ ব্যয় করার মন মানসিকতা না থাকলে ছাদ বাগান করে সফল হওয়া যাবে না ।  মনে রাখতে হবে মানসিক তৃপ্তিটাই ছাদ বাগানীদের জন্য শেষ কথা । 

কিভাবে শুরু করবেন : - 

আপনি যদি মনে করে থাকেন হুট করেই সুন্দর সাজানো গোছানো একটি ছাদ বাগান করে ফেলবেন । আত্মীয় স্বজন, বন্ধু, বান্ধব দেখতে এসে আপনার প্রসংসা করবে তাহলে হবে না । শুরুটা করতে হবে , ছোট ছোট টব এ গাছ লাগিয়ে । 

যদি সম্ভব হয়, আজই আপনার বারান্দায় দু'টো টবে গাছ লাগিয়ে ফেলুন । এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কি গাছ লাগাবেন?

যেহেতু বারান্দা তাই ধরেই নিতে হবে, গাছের জন্য অপরিহার্য তিনটি উপাদান আলো, বাতাস, রোদ্দুর কম । তাই আমি বলবো শুরুটা করুণ এমন কোন ফুলের গাছ দিয়ে যার ধৈর্য শক্তি অনেক অর্থাৎ কষ্ট সহিংস । আবার সেটি সকলের কাছেই প্রিয় । বলুন তো এমনটি দু'টি ফুল গাছ কি কি হতে পারে ?

হ্যা, ঠিক ই ধরেছেন । আমি গোলাপ এবং বেলি ফুলের কথা বলছি । এ দুটো গাছ অনেক কষ্ট সহ্য করে টিকে থাকতে পার। 

গোলাপ ও বেলিকে বেছে নিতে  আরো একটি কারণে । সেটি হচ্ছে, এ গাছ দুটিতে  রোগ, পোকার আক্রমণ হয় খুব কম । আবার কোন প্রকার যত্ন ছাড়াও অনেকদিন টিকে থাকতে পারে । ধরুণ আপনার বারান্দায় বেশ কয়েকটি টব রয়েছে । কিন্তু পুরো পরিবার নিয়ে আপনাকে এক সপ্তাহের জন্য অন্য কোথাও যেতে হলো । ফিরে আসার পর দেখলেন , আপনার সব গাছ মরে ভেটকি দিয়ে আছে । সেটা কি ভাল লাগবে ? লাগবে না ।  কিন্তু আপনার বারান্দায় যদি এ গাছ দুটো থাকে তাহলে কোথাও গেলে আপনাকে গাছের টেনশনে থাকতে হবে না ।  সে গ্যারাটি দিচ্ছি । 

আর যদি একটু যত্ন-আত্তি  করে ফুল ফুটিয়ে ফেলতে পারেন তাহলে দেখবেন । আপনার সেই সাফল্যে পরিবারের অন্য সবাইও খুশি হবে । 

একবার চিন্তা করুণ তো, আপনার বারান্দায় আপনার নিজ হাতে লাগানো গোলাপ গাছে ফুল ফুটে আছে আর আপনি সঙ্গী নিয়ে রাতে বারান্দায় চায়ের পেয়ালা হাতে বসে আছেন ।  

পরিবেশটাই অন্যরকম তাই না ? 

 

 

এর পর কি গাছ লাগাবেন : 

ধরে নিলাম গোলাপ এবং বেলি গাছে ফুল এনে আপনি সফল । গাছ লাগবার আগ্রহ আপনার বৃদ্ধি পেয়েছে । আরো গাছ লাগাতে চাচ্ছেন । তাহলে এখন কি গাছ লাগাবেন ? 

হ্যা এ পর্যায়ে এসে আপনি , পুইশাক ও করল্লা লাগান । এর জন্য আপনাকে খুব বড় ড্রামের দরকার হবে না । বাসা বাড়িতে নষ্ট হয়ে যাওয়া পুরাতন বালতি হলেই যথেষ্ট । পুরোনা বালতিতে মাটি ভরে , তাতে দু' তিনটে পুই শাক ও করল্লার দানা ফেলে দিন । দেখবেন আপনার স্বপ্নরা ডানা মেলে উড়তে শুরু করবে। 

কারণ গোলাপ ও বেলি গাছের মতো , করল্লা , পুইশাকও যথেষ্ট অবহেলায় বেঁচে থাকতে পারে। যখন বারান্দার পুই শাক আপনার ডাইনিং টেবিলে এসে খাবারের আইটেমের সাথে যোগ দিবে তখন আপনি কিন্তু মনে মনে ছাদ বাগান করার জন্য প্রস্তত নিয়ে ফেলবেন । ছাদ বাগান করার উপকার তিনটি , এক. নিজে হাতে লাগানো টাটকা ও ভেজাল মুক্ত সবজি ,  দুই , শারীরিক বেয়াম এবং তিন নাম্বার হচ্ছে, প্রকৃতিতে অক্সিজেন সাপ্লাই দেওয়া ।

 

পরিশেষ

এর পরের পোষ্টগুলোতে আমার ছাদে বাগানে সফলতার গল্পগুলো লিখবো তা পড়ে আপনিও সফল হতে পারবেন । খুব সহজেই জেনে নিতে পারবেন কি করে ধীরে ধীরে হয়ে উঠতে পারবেন একজন সফল নগর ছাষা ।